(পরিচালক বাক্ )
Friday, July 31, 2015
সত্যি কথা বলতে কী, যেশাসকে
আমার ততটা ধর্মীয় মানুষ মনে হয় না, যতটা জননেতা। এ ব্যাপারে ওঁর সঙ্গে
চৈতন্যদেবের খুব মেলে। বুদ্ধর মেলে। মহম্মদেরও কি মেলে না?
শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে বড়ো
জননেতা আর কে এসেছেন ভারতভূমিতে? সেই শ্রীকৃষ্ণের কথা আমি বলছি না যিনি বিপত্তারণ।
আমি সেই কৃষ্ণের কথা বলছি, যিনি দুর্যোধনের ঊরু এবং জরাসন্ধের যুক্তশরীরের খবর
জানতেন। সেই জানা তাঁকে অবতার করেছিল, কারন অবতার কোনো ধোয়া তুলসীপাতা নন। তিনি
গুডবয় নন।
এবং, ওঁরা প্রত্যেকেই
কবি। এই মহাপৃথিবী যে এক আদিঅন্তহীন লিখিত ভাষা, ওঁরা জানতেন। জীবনে বাঁচা যে আদতে
জীবনকে লেখা, অক্ষরে অক্ষরে, এটাই ওঁরা বলে গেছেন।
আর সেই বলার যে ১
ট্রিগার, সেটাও তো টানতে হয়েছে! কে বা কারা টেনেছেন সেটাকে?
যেশাসের ট্রিগার
ছিলেন, আমার মনে হয় না জন দ্য ব্যাপ্তিস্ত, বরং মনে হয় তিনি জুডাস। হ্যাঁ। জুডাস। সেই
ঘৃণিত জুডাস। জুডাসকে টেনেছেন যেশাসের জীবনদেবতা। এ এক প্যারাডক্স যে, খৃস্টীয়
পৃথিবী ক্রশকে পুজো করে, পেরেককে পুজো করে, সেই রোমান সৈনিকের বর্শাকে পুজো করে,
শ্রাউড অব তুরিনে আত্মহারা হয়ে যায়, কিন্তু জুডাসকে ঘেন্না করাই হল কাল্ট, অন্যথা
হলেই জুডাস এক টোটেমে পর্যবসিত হয়ে যান।
জুডাসকে মন্দ নয়, ভালো
নয়, অনির্নেয়তায় আবিষ্কার... একজন পুনরাধুনিকের কবিতা ভাবনা এরকমই। এরকমই হতে হয়তো
বাধ্য। তার পিপাসাটা বোঝা... যে কোনো পিপাসার মতোই যাকে ব্যাখ্যা করা যায়, এবং
কোনোভাবেই যায় না।
অনুপম
মুখোপাধ্যায়
(পরিচালক বাক্ )
(পরিচালক বাক্ )
চেনা
আনন্দগুলোকে
চিনে চিনে
আলাদা
করে রাখি
একটা
আনন্দ থেকে ব্যবধান রেখে
আরেকটা
আনন্দ।
সব
আনন্দেরই নিজের জানলা আছে
রোদ্দুরের
আয়োজনের বিশ্রামের
অঝোর
বৃষ্টির মধ্যে বড় পাতার নীচে
মা
শালিক আর মেয়ে শালিক।
চারদিকের
আলো শ্যামা আলো
দুটো
ভিজে ফুলের পাপড়ির নিঃস্বতা
ভাবি
কত আনন্দ দেখেছি
কত
হাজারটা দিন পার হয়ে একটা দিন।
বাড়ি
বলছে সবকটা খুঁটিনাটি
ঘুম
আলোর গান প্রাণের গান
সুখের
গান
একটা
দিন নেই
দশ
হাজারটা চেনা।
আনছে কলস হচ্ছি নোসদ
ভরা
বাদলে পাঙ্ক রক
হার্ড রক
টেরর
মিউজিক
ফৌজি
পোশাকে জঙ্গি
মেঘমল্লারে
ভাঙছে
মেঘ
রাতদুপুরে
মাফিয়ারাজের কোটালি আতঙ্ক
প্রমোটারের
মাল
নামছে
ঘরে
ঘরে জল ঢুকছে মহানগরীর
মৌসুমী বৃষ্টির রুটবদল
বজ্রপাতের হুলুদ্দুম
বাঙ্কারে
জীবতারা
মারকাটারি নচ্ছার বাহুবলির চেয়ে
হাতি ঢের ইন্টেলিজেন্ট
আজও
তার পুজো নিয়ে রূপ সিদ্ধিনাথ
ভাবছি
কোথায় যাই
সার্কাসে
কার্নিভাল
লোকসভার গ্যালারি
ডেডলাইন
১।
জোড়াতালির সুষুম্নায় এক পাখি
দোল নেই, দোদুল নেই
মেঘ মুছতে মুছতে
চলে যাচ্ছ হাওয়ামোরগের দিকে
ফিরেও আসছ যত অবধি নতজানু
পোষ মেনে থাকে
মুখের ওপর ওই রহস্যরং দেখে নিতে
আর কতবার বলো
শূন্য থেকে ভানুমতী খেল্
দেখানোর
ছল ও ছলাৎ নদী হবে!
২।
অসম্ভব পর্যন্ত যেতে পারি
তুমি তাকেও অতিক্রমের কথা বলো
তুলাদণ্ডের একদিকে
আত্মা সাজিয়ে
যথাযোগ্য ভর খুঁজে যাচ্ছি
রাত্রি নামার পর এত ভয় কেন, এত দ্বিধা কেন
পালকের এলোমেলো তারও কিছু উদ্বেগ
বিস্তৃত আহ্লাদে যাকে এই বঁড়শীতে
আলগা টানে ছুঁড়ে ফেলা যায়
সেরকম সিঁড়ির নিচেই ঘর এক, আলোহীন
খসখসে স্মৃতির ভেতর দিয়ে সন্ধ্যা সাজিয়ে
বসে আছে
স্টেশন অবধি যাতায়াত, ভুল ট্রেন, হুইসল,
চাকার আওয়াজ
তারপরই আসা বা যাওয়ার দিকে সরলরেখার
গোল গোল ঘুরে চলা
ছেড়ে যাচ্ছ ভেবে যার আশেপাশে জড়িয়ে পড়ছ
ক্রমাগত
ভালোবাসার কবিতা
১
যদি না আস্তে হাসতে কিছুটা ভাসার
তাগিদ রয়ে যেত
২
এক দু গাছা গল্পে না-ফেরা কামিনা...
সুর ধরে বাড়ি ছাড়ে
৩
বোরিং চলে যাওয়া, এত বোরিং..... কলার
তো উঁচুই ছিল
৪
ধরো কোন এক শ্বেত পাথরের প্রাসাদে
এতটা শ্যামল, চাপা হাই,তবুও!
৫
আজ যে রকম, কাল একটু আলাদা, পরশু
তো পুরো ঢেউ....
চাঁপার আঙুল, আমার আঙুলও বসে নেই
৭
আমায় না দেখে, দেখো... আমায় না
ভেবে ভাবো... আমায় না ক’রে..
৮
বিলম্বে ডাকি... ডাক হরকরা হয়ে
যায়...
৯
সে নদি পেরোত সাবধানে, সে ডুবেছিল
একবারই
১০
একটু ভেজা... মেঘ ছিল... একটু
দেরি, মেজাজ ছিলনা... তবু লাগালাম, লাগলো... লাগলো ঠিকঠাক কোমল সা?
১১
বুটি বুটি... ৎ ... পড়ছে ........
বৃষ্টি ভাবলে বৃষ্টি...... না ভাবলেও বৃষ্টি তোমার নাম....
১২
রাস্তাটা জল নিয়ে এল শেষ পর্যন্ত,
তুমি স্মিত আঁজলা...
রাস্তাই একমাত্র রাস্তা
৩টি পুনরাধুনিক কবিতা
পরাগ দিল না
।
আমার
খবর জবাব নেই। কুসুমের কাছে
বাগান
আমাকে এখানে। এই। নোটিশ দিয়েছে
।
বোঁটা
জানে। ডাল জানে। মালি নই আমি
বেতন
দিয়েছে। শুধু। পরাগ দিল না
।
হায়ের
বয়স কত। কেউ কি তা জানে
এতদিন।
ছায়া তো সে রোদেই ফেলেছে
।
ধুলোর
অনেক কাছে। রেণু। রাখা ছিল
আমার
এলার্জি। তার। ঠিকানা হদিশ পেল না
।
সুগন্ধ
এভাবে। বেশ। কেটেই চলেছে
অপর
সুগন্ধী। সেই। মনে পড়ে গেল
।
কিছু
নেই। খুব জানি। কিছুই তো নেই
মাসের
১ম। এই। বেতন সুরাহা দিয়েছে
।
হতে পারিনি
।
হতে
যে পারিনি। আমি। ভালো। বা খারাপ
এ
কোনো অসুখ নয়। এ হল ওষুধ
।
ওষুধের
রোগ নেই। আবেগ জুনুন তা জানে
ঘরের
চিরাগ বাতিও জানে। জোনাকি জানে না
।
গোলাপের
টব। রোজ। রোজ মরে যায়
আলাদা
বলার ঝোঁক চোট। খাটো কুয়াশায়
।
ডেটল
লাগাব। তার সেই। জায়গা তো নেই
চামড়া
পুড়িয়ে ফেলি। দাওয়াখানা খুঁজি
।
ভালো
নই। আমি। আমি। খারাপও তো নই
তোমার
বাজারে বাজার। আমি। দোকান দিয়েছি
।
কেন
তবু ভুল বোঝো। কেন। ভালো ভাবো
কেন
যে খারাপ ভাবো। পুরিয়া তো নই
।
বর্ষায় কই
।
যেখানে
মেঘেরা এসে খেলাধুলো চাটাচাটি করে
অনুপম।
তুমি কেন। সেখানে বসেছ
।
আজব
লাবণ্য ছিল। পলকের কই
১-এর
পুকুর থেকে অপরের জলে
।
হেঁটে
হেঁটে চলে গেল। নজরের আঁশ
কথায়
পাচার হল। কাহিনি হল না
।
কুয়াশা
পাইনি। ওই। মেঘেদের ছায়া
দুধে।
দ্যাখো। কেঁপে যায় ছানার আভাস
।
খুব
অশিক্ষিত। আমি। বিছানা পেয়েছি
এখুনি
উঠিয়ে নাও। দেরি কেন করো
।
আষাঢ়ে
পিছল নেই। পতাকাও নেই
ছিপের
ছায়াটি। যথা। জলে পড়ে আছে
।
সংগ্রহ করুন অনুপমের নতুন
কাব্যগ্রন্থটি। কলকাতার ধ্যানবিন্দু, দে বুক স্টোরে পাবেন। একটু বেশি
ডিসকাউন্টে পাবেন প্রকাশক 'কবিতীর্থ'-র
ঠিকানায় (৬৫, সীতারাম ঘোষ স্ট্রীট, কলকাতা
৯)। আমাজনে পাবেন। লিংক হল http://www.amazon.in/Prokolpo-O-Sfotik-Anupam-Mukhopadhyay/dp/8193100409/ ব্যক্তিগতভাবে
কিনতে হলে অনুপমের সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ করুন। প্রচ্ছদ প্রদোষ পাল। মূল্য ১০০
টাকা।
ভ্রূণ তর্পণ
কিছু একটা ঘটবেই
আবছায়ার ভেতর হাততালি
দিচ্ছে হাওয়া ।
...এবং আশাপ্রবনতা ।
জ্বরের নামতা গুনতে গুনতে প্রস্তাবনার
রাফখাতা - অন্ধকারে
দীর্ঘ ছায়া উড়িয়ে দিল কেউ
তাকে দেখতে পাচ্ছ ?
হিমবীজ ছড়িয়ে যাচ্ছে
কৃষক
শব্দ ক্ষেত
। ঠোঁটে হাসি বোবা স্বপ্নে
ফসলের ঋতু
পরিচর্চা
আর্দ্রতার
দ্রবণে শুকিয়ে যাচ্ছে খরা
আঁজলায় জলছবি
ভ্রূণতর্পণ
নিউটন অথবা
আপেলের জন্ম বৃত্তান্ত
বল ছুঁড়ে দিচ্ছি উপরে
আর কাপড়ে মুখ ঢেকে
মাংসের গল্প করছে
একদল লোক ।
একটা হাসি ঝরে
প ড় ছে কোথাও
চিৎকারের ভেতর অঝোর বৃষ্টি
শুকোতে দিয়ে গেছে লম্বাদুপুর।
অকথ্য লোভের
মাধ্যাকর্ষণ
নীচে
নেমে আসছে পথ ।
এই নষ্ট অবসান
ধুলোর কার্নিশে বসে
একবিন্দু শিকড়ের দিকে
কয়েক পলক
বৃষ্টি আকুল এই সম্ভাবনা
বেঁচে আছে
আনন্দচঞ্চল
নিরুত্তাপ দিশার অভাব
ঘুমিয়ে পড়ার আগে অন্তত একবার
লম্বা দুপুর লিখি
সাদাপাতা জ্যোতিষ্কস্বপ্নের লিপি
রুদ্ধ ডানার গায়ে মুক্ত
আকাশ
উড়ে যাক ......
এই নষ্ট হৃদিক্ষত ।
দূরত্ব
শান্ত
বিকেলের নাম উপনিষদ
বিশেষ
করে বেদনা পরিচালিত
আচরণ
ও মনোভঙ্গির নাম সাইকোপ্যাথ...
আমাদের
আছে অভিযানের বাঁদিক
আর
ডানদিকের অনুমোদন...
কম-বেশি
হয়না এমন অনুভূতি ও মনখারাপ
সন্ধের
একটু পরে বাড়ি ফেরে...
পার্টি
অফিসের পাশেই কোল্ড স্টোরেজ, বিউটি পার্লার
ওর
কাছেই রক্ষিত বাড়ির বড় মেয়ে...
বস্তুত
পৌঁছে যাওয়া মানে একধরণের নিঃস্ব নালিশ
যা
এই মফঃস্বল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে...
শ্যুটিং
অথবা
তুমি সেই মর্মের ঝিলিমিলি
যত্নে
লাগানো আন্দোলন
নোংরা
উদ্বেগের টুকরো... ক্ষয়ে যাওয়া আফশোস
স্মৃতির
গন্ধের ভেতর...
বুকের
অতি কাছে ফসফরাস
বুকের
অতি কাছে ইনসিওরেন্স
রাস্তাঘাট
ক্রমশ ফাঁকা
কেবল
ফার্মেসির সামনে ক্রিয়াপদের অপেক্ষা
আঙুলেরা
ভিড়ে যাচ্ছে অস্টিও প্ররোচনায়...
ফাঁকা
মাঠে গুলির আওয়াজ, কালশিটে পড়া রাত্রি ২টা
চাঁদ
ঢেলে দেবে ফর্সা শরীর
নদী পেরিয়ে আজ পাখির শব্দ শুনতে যাবো...
বর্ষাদেশীয় ভ্রমণ
এখানে,
জুলাইয়ের এক সন্ধ্যার
স্টেশনের
কাছে নিঃসঙ্গ ৪১
চাকরিবাকরিহীন,
কর্মসূচিহীন...
কতরকমের
সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়া শহর
বাচ্চা
আসছে না বলে আমিষ না খাওয়া মাদুলির হাত
কেবল
একটা নিঃশ্বাসের জন্য
হুডখোলা
নদীর কাছে কাকুতিমিনতি মধ্যরাত
মাঠের
ওপর দিয়ে ছুটে যাওয়া বৃষ্টির অনুশীলন
২৫
বছর আগে প্রথমবার মনে পড়ছে
এখনো
ঠিক হলনা বুধবারের রাত্রি কী করব
চাঁদ
চুঁইয়ে নামলে আমার নেশা হয়ে যাবে
অবসাদ
বেড়ে যাবে, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাবে
হাসপাতাল,
হাসপাতাল বলে ভালোবাসবো কাকে
ঘরসংসার,
কোলের কাছে ঘেঁষে থাকা পুপুল
আদর
আদর তোমার কোনো ওষুধ নেই রজনী
অবশেষে
ভীতিজন্ম কশেরুক বিকর্ষণে
মুক্তি খুঁজে যায়।
হাতের আঙুলে অবিকল স্পর্শ, শীতল শ্লেষ
পাচন থেকে পচন, নিশ্চিন্তে কাটানোর ভান
উদাসীনতা... যাপনের মানে বোঝো না।
শেষ রাতে নিভে গেছে, মিলনভূক শ্বাপদের হয়রানি।
দাঁতের ফাঁকে উঁকি দেওয়া ক্লান্ত
জিভ,
তার ঘুমন্ত মুখখানি দেখি... আদরগন্ধ ফিকে হয়ে গেছে।
নদীতটে গিয়ে দেখি, পলি বুকে পিপাসারা জেগে
আর পারবে না চিনে নিতে, মনগুলো স্মৃতিবদ্ধ নেই।
অথচ, হ্যারিকেনের আলো চিনে গ্রামীন কুলবধু
ছুঁয়েছিল ভিজে চৌকাঠ।
কে বা দেখে সান্ধ্যলগ্নে... লাল দাগ,
পরিচিত পায়ে।
ইকারোস
ঝাঁপিয়ে পড়ে বোঝা যায় -
শূন্যে বাতাস বুক ছুঁয়ে
ছুঁয়ে কাটে
প্রহেলিকা
ঊষা, কিংবা গোধূলি
আলো থেকেই যায় দিগন্তের
একদিকে
সারাৎসার
গলে গলে মোম, জ্বলে শেষ
বিনষ্ট ডানাজন্ম,
আকাশ দেখে আঙুল ওঠে,
হাসি ফোটে
সোহাগ ভরে
শূন্যের চিবুক ছুঁতে চায়
কিনার থেকে খানিকটা দূর
তল থেকে উঁচুতে অনেক
ঝাঁপিয়ে পড়ে বোঝা যায় -
মিথবাতা রিতায়তে
খোলাম কুচি
খোলাম কুচি
চাকায় পিষে ছিটকে এসে
কোথাও
সশব্দে আঘাৎ হেনে শেষ
কানাভাঙা গবলেটে
ঘুম ভাঙা ওয়াইন
আকাশ খোঁজা, মেঘ হওয়া...
দেখতে দেখতে
প্রতিবারই ভাবি -
ভাগ্যিস... চোখে লাগে নি!
পারদ
কোনো যুগে তোমার সাথে
ভালোবাসা ছির বলে
এখনো অকস্মাৎ দেখা হয়ে যায়
চেনা শহরের কার্নিশে স্তিমিত
আলোয়
যখন উৎসবে জ্বলে ওঠে এল সি ডি ল্যাম্প
তোমাকে খুব রহস্যময়ী লাগে
মনে হয় মায়া সভ্যতায়
এসে দাঁড়িয়ে পড়েছি
আমাদের মধ্যবর্তী কথাবার্তা নীল ও বিস্তৃত
যেন অশরীরী সময় ঘিরেছে
তৃষ্ণা জগৎ
তুমি কী লাবণ্যময়ী প্রচ্ছন্ন
ভাষায়
আমার হৃদয়ের সাহস নেই তোমাকে
ছুঁয়ে দেখে
কতটা পারদ উঠেছে তোমার
ও বুকে
পরনারী
প্রতিদিন এরকম চলতে থাকলে
একদিন বিপর্যয় ঘটে যাবে
জীবনে
অসম্পূর্ণ তোমাকে পাওয়ার রুক্ষতায়
সারারাত হেঁচকি ওঠে চাঁদজ্যোৎস্নায়
আন্দোলিত শরীরের ভেতর অতৃপ্ত
কাম
বাসনার রহস্য খুলতে গিয়ে
দেখি
তোমার পরিবেশ জুড়ে কালবৈশাখী
হয়ে যাওয়া
স্বচ্ছ বিকেল
অথচ আমার দোষ কোথায়
বলো---
রোজদিন দূরে সরে সরে
একদিন আমিও তো হিংস্র
হয়ে যেতে পারি
নিজেকে জুড়োতে গিয়ে যদি ধরি অন্য
নারী
নতুন পোস্টার
দূরে দূরে ওই সব গাছেদের
কাছে কোনোদিন যাইনি
গাঢ় সবুজ হতে হতে কালো
হয়ে গেছে চোখ
ওইখানে আলো আছে স্বচ্ছ
সকালের মতো
প্রকৃতি ডাকলে প্রান্তরে যাই,
রঙিন দিগন্ত
স্মৃতি উঠে আসে পুরনো
ডায়েরির পাত ছিঁড়ে
বর্ষার অঝোর বৃষ্টি এইসব
ছেঁড়া পাতা
পোস্টার করে এঁটে দিচ্ছে
বুকে
বুকের ভেতর আছে অসংখ্য
ক্ষত---
এইসব ক্ষতর অব্যক্ত কথা এখন
পুরনো কষ্টর সাথে জলছাপ
হয়ে
উঠে আসছে নতুন লেখার
পোস্টারে
বিষ
জীবন আমাকে ছোবল মেরে চলে যায়
তার বিষে বিষে শরীর নীল---
অথচ জীবন কী সুন্দর, সাতরঙে
মেশা
সমূহ ভূ-স্বর্গ যেন বহন করছে
জীবনের ডালপালায় সকালের রোদ
পাখি বসছে, কূজন-আদর
ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে কাজে যাচ্ছে মেয়েপুরুষ
সকলের চোখে-মুখে তৃপ্তির ছাপ
শুধু জীবন আমাকে ছোবল মেরে চলে যাচ্ছে
তার ফণায় ফণায় লুকোনো বিষ
আগুন ও জল্ একাকার করে দিচ্ছে---
আমার সাধ্য নেই নিজেকে স্থির করে রাখা
গর্ভ
শহরের কিনার ঘেঁসে আজও গ্রাম
অপ্রত্যন্ত ---
আমরা শহুরে মানুষেরা এখনও গ্রামীন
রক্তের ভেতর সবুজগন্ধ ও পাখি ডেকে যায়
সেই কবে ঝর্নার শীতল জলে গা ডুবিয়ে
শহরের পথে পা রেখেছিলাম
আমাদের পা-য়ের মাটি আজও উর্বর
শুধু কর্ষণ অযোগ্যতায় গোপন রয়েছে গর্ভ