Friday, July 31, 2015
সাম্প্রতিক সময়ের সুপরিচিত
তামিল কবি কে. কনগলথা।১৯৬৮ সালে শ্রীলংকায় জন্মগ্রহণ করেন
কনগলথা।গৃহযুদ্ধ-দীর্ণ দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকা, তামিল ইলমের রক্তস্নাত ইতিহাস এক অন্য বাস্তবতায় উঠে আসে তাঁর
কবিতায়।থিভেলি (২০০৩),পাম্পুক
কাত্তিল অরু থাজাই(২০০৪), তাঁর
উল্লেখজনক কাব্যগ্রন্থ।তাঁর ছোটগল্পের সংকলন, ‘নান কোলাই সেয়াম পেনকাল’ ২০০৮ সালে সিঙ্গাপুর লিটারেরি প্রাইজ পেয়েছিল। বর্তমানে
সিঙ্গাপুরের তামিল দৈনিক ‘তামিল মুরাসুর’ নিউজ এডিটর কানাগলথা।
কে. কনগলথার কবিতা
মৃত্যুকে ভুলে যাওয়া
মৃত্যুই শেষ কথা নয়,
যদিও আমরা সেটাই ভেবে নিই।
যতদিন আমরা বেঁচে থাকব
ততদিন অনেকবার মরে যেতে হবে
আমাদের।
আসলে পুরোটাই একটি জটিল
ধাঁধাঁর মত
আর ক্ষতগুলিও কোনদিন ভরাট করা
যায় না।
একটি তীব্র ময়ালের মত
মৃত্যু একদিন আমাদের গলাটা
পেঁচিয়ে ধরবে।
আমরা কোনমতেই নামাতে পারব না ঐ
মৃত্যুভার
এমনকি বাথরুমে গিয়েও রেহাই
পাবো না।
একটি ছাড়া পাওয়া ভুত
যেভাবে ঠিক করে উঠতে পারে না
কোনদিকে যাবে
মৃত মানুষদের তালিকাটি শুধু
লম্বা হতে থাকে।
মা,
বাবা,বন্ধুবান্ধব,আত্মীয়দের
দিয়ে শুরু হয়,
আর শুধু লম্বা হয়েই যায়
তালিকাটি।
এক পাড়ায় যে লোকগুলো একসাথে
থাকে
এক গ্রামে যারা একসাথে থাকে
এক ভাষায় যারা কথা বলে
যদি কেউ তোমাকে বলে
সময় সবকিছু ঠিক করে দেবে,
তার কথায় একদম বিশ্বাস কোরো
না।
একজন মানুষ না কেঁদেও বাঁচতে
পারে
একজন মানুষ চিন্তা না করেও
বাঁচতে পারে
একজন মানুষ না ঘুমিয়েও বেঁচে
থাকতে পারে
কিন্তু স্বপ্নের ভেতর
মৃত মানুষদের জ্যান্ত হয়ে ফিরে
আসা,
কেউ আটকাতে পারে না কোনদিন।
একটি খোলা জেলখানা
খুব তাড়াহুড়োয় চাবির গোছাটাই
তুমি ফেলে গিয়েছ।
দাঁড়াও,আমিও আসছি
তোমার সাথে যাব।
তোমার কুঠুরিটার তো
কোন দরজাই ছিল না!
তবু তুমি চাবির গোছাটাকে আগলে
রাখতে।
মেয়েদের চুল দিয়ে
বানানো ছিল রিংটা
আর অনেক রকমের চাবি
ঝুলত চাবির গোছাটাতে।
দরজা না থাকলেও,
তোমার ফিরে আসার জন্য
চাবিগুলোর আওয়াজ
খুব জরুরী ছিল।
ঐ একটি মুহূর্তে
যখন চাবিগুলো নড়াচড়া করছিল না
আমার হাওয়া
তোমার কুঠুরিটাতে আছড়ে পড়েছিল।
আর তুমি ক্ষেপে গিয়ে
আমার বাড়িটাই পুড়িয়ে দিয়েছিলে!
ঠিক আছে।
এবার আমি আমার চড়াই পাখিগুলোকে
পাঠাব।
আগুন ছুঁতেও পারবে না ওদের।
তোমার কুঠুরিটা তাহলে
আলোয় আলো হয়ে যাবে।
স্মৃতিচিহ্নের উৎসব
একটি দেশ ছিল এখানে
আর একটি জাতিও ঐ দেশটিতে থাকত।
তাদের স্মৃতিতেই
আজকের এই উৎসব।
ফুল
আর তার সাথে কবিতা, গল্প,
রূপকথারা।
মন্ত্রী, সান্ত্রী
আর নায়িকাদের ভিড়।
কনফারেন্স,বক্তৃতামালা সবকিছু
চলছে।
মহিলা আর বুদ্ধিজীবীদের দিকেই
তাকিয়ে সবাই।
উপচে পড়ছে ওয়েব লিংকগুলি,
ইন্টারনেটের পেজ বেয়ে গড়িয়ে
নামছে
ফটো, বাইট আর
দর্শনার্থীদের ভিডিও ফুটেজ
চারদিকে থিকথিক করছে
রক্ত গরম করা মিউজিক সিডিগুলি।
মন্দিরগুলোতে স্পেশাল পূজার
ব্যবস্থা করা হয়েছে
জাত,ধর্মের তোয়াক্কা না করেই
সবাই পূজা দিতে আসছে
সেবাইত আর নাস্তিক
দু’পক্ষই আলাদা আলাদা জায়গায়
ভিড় জমাচ্ছে।
দুমদাম করেই কেউ
মিছিল কিম্বা ভুখ হরতাল ডেকে
দিচ্ছে।
টাকা উড়ছে শুধু।
কিন্তু মুশকিলটা হলো,
কাঁটাতারের বেড়াটা নিয়ে কেউ
কিছু বলছে না।
ওটাকে উপড়ে ফেলার কথা কেউ বলছে
না।
ভাষান্তরঃ শৌভিক দে সরকার
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
সৌরভ ও সৌন্দর্যের আকর হয়ে উঠেছে । খুব ভালো লাগলো ।
ReplyDelete