• কবিতা সুর্মা


    কবি কবিতা আর কবিতার কাজল-লতা জুড়ে যে আলো-অন্ধকার তার নিজস্ব পুনর্লিখন।


    সম্পাদনায় - উমাপদ কর
  • সাক্ষাৎকার


    এই বিভাগে পাবেন এক বা একাধিক কবির সাক্ষাৎকার। নিয়েছেন আরেক কবি, বা কবিতার মগ্ন পাঠক। বাঁধাগতের বাইরে কিছু কথাবার্তা, যা চিন্তাভাবনার দিগন্তকে ফুটো করে দিতে চায়।


    সম্পাদনায়ঃ মৃগাঙ্কশেখর গঙ্গোপাধ্যায়
  • গল্পনা


    গল্প নয়। গল্পের সংজ্ঞাকে প্রশ্ন করতে চায় এই বিভাগ। প্রতিটি সংখ্যায় আপনারা পাবেন এমন এক পাঠবস্তু, যা প্রচলিতকে থামিয়ে দেয়, এবং নতুনের পথ দেখিয়ে দেয়।


    সম্পাদনায়ঃ অর্ক চট্টোপাধ্যায়
  • হারানো কবিতাগুলো - রমিতের জানালায়


    আমাদের পাঠকরা এই বিভাগটির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন বারবার। এক নিবিষ্ট খনকের মতো রমিত দে, বাংলা কবিতার বিস্মৃত ও অবহেলিত মণিমুক্তোগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে আনছেন, ও আমাদের গর্বিত করছেন।


    সম্পাদনায় - রমিত দে
  • কবিতা ভাষান


    ভাষা। সে কি কবিতার অন্তরায়, নাকি সহায়? ভাষান্তর। সে কি হয় কবিতার? কবিতা কি ভেসে যায় এক ভাষা থেকে আরেকে? জানতে হলে এই বিভাগটিতে আসতেই হবে আপনাকে।


    সম্পাদনায় - শৌভিক দে সরকার
  • অন্য ভাষার কবিতা


    আমরা বিশ্বাস করি, একটি ভাষার কবিতা সমৃদ্ধ হয় আরেক ভাষার কবিতায়। আমরা বিশ্বাস করি সৎ ও পরিশ্রমী অনুবাদ পারে আমাদের হীনমন্যতা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরটি সম্পর্কে সজাগ করে দিতে।


    সম্পাদনায় - অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়
  • এ মাসের কবি


    মাসের ব্যাপারটা অজুহাত মাত্র। তারিখ কোনো বিষয়ই নয় এই বিভাগে। আসলে আমরা আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কবিকে নিজেদের মনোভাব জানাতে চাই। একটা সংখ্যায় আমরা একজনকে একটু সিংহাসনে বসাতে চাই। আশা করি, কেউ কিছু মনে করবেন না।


    সম্পাদনায় - নীলাব্জ চক্রবর্তী
  • পাঠম্যানিয়ার পেরিস্কোপ


    সমালোচনা সাহিত্য এখন স্তুতি আর নিন্দার আখড়ায় পর্যবসিত। গোষ্ঠীবদ্ধতার চরমতম রূপ সেখানে চোখে পড়ে। গ্রন্থসমালোচনার এই বিভাগটিতে আমরা একটু সততার আশ্বাস পেতে চাই, পেতে চাই খোলা হাওয়ার আমেজ।


    সম্পাদনায় - সব্যসাচী হাজরা
  • দৃশ্যত


    ছবি আর কবিতার ভেদ কি মুছে ফেলতে চান, পাঠক? কিন্তু কেন? ওরা তো আলাদা হয়েই বেশ আছে। কবি কিছু নিচ্ছেন ক্যানভাস থেকে, শিল্পী কিছু নিচ্ছেন অক্ষরমালা থেকে। চক্ষুকর্ণের এই বিনিময়, আহা, শাশ্বত হোক।


    সম্পাদনায় - অমিত বিশ্বাস

Friday, July 31, 2015

অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথোপকথন

মৃগাঙ্কশেখর: 
কি নিয়ে কথা বলা যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় কথা বলি। কি নিয়ে বলব বুঝে পাই না। এই সময়টা ঠিক আর সহ্য হচ্ছে না। 
অর্জুন: 
যা মনে আসছে এই মুহূর্তে সেটাই বলো। যেভাবে আসছে, সেটাই। 
আচ্ছা আমি করি

মৃগাঙ্কশেখর: 
কিছুই না। ইদানীং একটা জিনিস মনে হয়, কিছু কি করে যাওয়া যাবে? পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছি। কিন্তু সেগুলো কি থেকে যাবে? কিছু মানুষের কাছ থেকে যা মতামত পাচ্ছি, বুঝতে পারছি, ওয়েভে মিলছে না, আমাদের ভাবনা। এই যে ওয়েভ মেলানো, এটাই একটা সমস্যা। কেউ কেউ বলছে, আমরা একে অপরের পিঠ চাপড়ে যাচ্ছি। আসলে কেউ কারোরটা বুঝতে পারছি না। জোড়াতালি দিয়ে সব কিছু। 

অর্জুন: 
কি বলি মৃগাঙ্ক। একটু আগে আমার ঘর থেকে (বাড়ি নয়, ঘর) সাইকোলজিস্ট গেলেন। দেখতে এসেছিলেন। আমায়। অনেক ফ্রয়েড - ইয়ুং বললেন। জানা কথাই। ইদানীং আমি নিজে প্রচণ্ড low self esteemএ ভুগছি। মারাত্মক ভাবে। কোনো কাজেই, এমন কি কারো সাথে কথা বলতে গেলেও, (এই যে তোমার সাথে বলছি, কি বোর্ড হাতড়াচ্ছি, কি লিখব, যা লিখব, ঠিক লিখব তো?) মিনিমাম কনফিডেন্স পাচ্ছি না। লেখালিখি, পড়াশোনা সব বন্ধ। একটা সাধারণ বাংলা বা ইংরেজি টেক্সট পড়ে বুঝে উঠেই কয়েক ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে আসলে কি বলতে চেয়েছে
আমি নিজে একসাথে অনেকগুলো কাজ ক'রে অভ্যস্ত। যেন মাথার মদ্যে এক একটা লাদা আলাদা প্রকোষ্ঠ করা আছে, তাদের সবার আলাদা আলাদা কাজ।  তাই ৩টে সিনেমা দেখতে, (মানে একটা ১০ মিনিট দেখলাম, অফ ক'রে আরেকটা দেখলাম ১৫ মিনিট, এইভাবে) একটা লেখা এবং একটা বই ( বই মানে ফিল্ম নয়, কিতাব, পুস্তক, বুক) নিয়ে বসতে পারি। এখন পারছি না। তিন রকমের ৩টে আলাদা মেইলের একসাথে পেলে, বা এফবিতে চারজন একসাথে  চারটে বিশয় নিয়ে কথা বলতে এলে, মাথার ভেতর ক্যাসেটে রিল যেন পেঁচিয়ে যাচ্ছে। ভেতরের সিস্টেম হ্যাঙ করে যাচ্ছে 
হঠাৎ কি খেয়াল হয়েছে, প্রায় আট-ন' বছর বাদে মাথায় চেপেছে এই ভূত, ছবি আঁকছি। নিজের ভাবনা যেমন আসছে, সেইভাবে। এক একটা মুখ নিয়ে, রেখা নিয়ে স্টাডি করছি। হাত নেই, কনফিডেন্স নেই। একটা বাঁচোয়া, আমি তো আর শিল্পী হওয়ার জন্য আঁকছি না। যতক্ষণ আঁকছি একমাত্র ততক্ষণই সবচেয়ে ভালো থাকছি। কিন্তু একটা ছবিতে কনসেনট্রেট করার জন্য আমায় ৮-১০ঘন্টা সময় ও শ্রম দিতে হচ্ছে। মানে, ধরো দুপুরে আমি একটা ছবি নিয়ে বসলাম, মাঝ রাত কি ভোর-রাতে আমি সেটাকে হয়ত একটা জায়গায় আনার মতো ক'রে শুরু করতে পারলাম। 

মৃগাঙ্কশেখর: 
আমারও মাঝে মাঝে এমনটা হয়। মাথা কাজ করে না। আমি তখন এম সি এ সেকেন্ড সেম। হঠাৎ দেখলাম, হঠাৎই একদিন ঘুম থেকে উঠে। কিছু ভালো লাগছে না।  আমার যা যা ভালো লাগে সেগুলো সহ্য করতে পারছি না। আগে মন ভালো না লাগলে কবিতা পড়তাম সিনেমা দেখতাম, আমার সিনেমার পছন্দ তুমি জানো। সে রকম সিনেমাই থাকে আমার এক হার্ড ডিস্ক ভর্তি। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম সেগুলো দেখতেও ভালো লাগছে না। আমি বুঝতে পারছি না, কি হল হঠাৎ। ভাবলাম, মন ভালো নেই, গান শুনি। ইউ টিউবে গিয়ে গান শুনতে গিয়ে, হুট করে মনে হল, লর্ড অফ দ্যা রিং দেখি। তখনই নামালাম। দেখতে লাগলাম। ভালো লাগল। আমি অবাক হলাম। আমার মোটেই এই ধরণের সিনেমা আগে ভালো লাগতো না। এই একটু আগেই এক বন্ধু বলল, জুরাসিক ওয়ার্ল্ড দেখতে যাবি। একটুও ইচ্ছে হল না। কিন্তু সেই সময়টা চুটিয়ে সেসব দেখলাম। বাংলা জিতের বস্‌ দেখলাম। এই সময়টা এক দু সপ্তাহ থাকল। তারপর আমার আগের মতো। 
আমি ছবি আঁকি ছোট থেকে। অনেক ছোট থেকে। দাদার দেখে দেখে আঁকতাম। আমাকে স্কুলে ভর্তি করা হল। ছবি আঁকা শেখানো। আমার আঁকতে ভালো লাগত। স্যারেরা ভালো বলত। উৎসাহ পেতাম।
অর্জুন: আমি কিন্তু কোনোদিনই প্রথাগত আঁকা শিখিনি। মানে, ইশকুলে গিয়ে, বা কারো কাছে হাতে ধরে। এভাবে শিখিনি। একদিনের জন্যেও না। কিন্তু এই আট-ন' বছর আঁকিনি, ইনফ্যাক্ট ছবির জন্য কিছুই করিনি, তাহলে কি করে আজকে হঠাৎ বসে আঁকতে পারছি? তাহলে কি ন বছর ধরে আমার অজান্তে আমার সাব-কনশাসে ছবির কাজটা চলছিল? সেগুলো আজকে একটা বেরোবার পথ খুঁজে পেয়েছে?

মৃগাঙ্কশেখর: দেখাবে ?
অর্জুন: কি?

মৃগাঙ্কশেখর: তোমার আঁকা ছবি
অর্জুন:













মৃগাঙ্কশেখর: পেইন্ট -এ আঁকছ ?
অর্জুন: না।
জার্নালে 
আমি পেইন্টে আঁকতে পারি না। 

মৃগাঙ্কশেখর: 
আচ্ছা। আমি যখন খুব রেগে যেতাম ছোটবেলায়। তখন যা ইচ্ছে তাই আঁকতাম। মাথা মুণ্ডু নেই এরকম। তারপর ফার্স্ট ইয়ারের শেষের দিকে, একটা কাগজ নিয়ে জলে ভেজাতাম, তারপর রঙ দিয়ে দিতাম। তুলি বোলাতে বোলাতে মাথায় যা যা আসত আঁকতে থাকতাম। কখনো একটা ছবি শুরু করে অন্য ছবিতে চলে যেতাম। আমার এক বন্ধু বলেছিল, তার এক দিদি ছিল যে সাইকোলজি নিয়ে পড়ত। সে বলেছিল, মানুষের ছবি আঁকা দেখে তার মনের অবস্থা বোঝা যায়। 
একবার এক দাদা বলেছিল, এরকম যদি কোন কথা বলা যায়। আমি একটা ছবি আঁকলাম তার উত্তরে তুমি একটা ছবি আঁকলে।
অর্জুন: 
আসলে কিছুই বোঝা যায় না। কারুর দায়ও নেই বোঝার। কেন বুঝতে যাবে? নবারুণের ওই ছবি ফেবুকে পোস্ট করেছিলাম। 'beautiful',' দুর্দান্ত', nice' এইসব বালের (এটাকে ডিলিট কোরো না যেন) কমেন্ট আসছে। ছবিটায় যে ঝড়ে নবারুণের একটা খোখলা হয়ে যাওয়া মুখ । এক চোখে ভূতের ক্যাওড়া নাচ চলছে, তাও চোখের পলক না ফেলে ঠায় তাকিয়ে আছে, এই ঝড়টাই কেউ বুঝতে চেষ্টা করে না

মৃগাঙ্কশেখর: 
মানুষ ইদানীং খুব অলস আর ঠগবাজ হয়ে যাচ্ছে। ধারণা। একজন ততোটাই সময় দিচ্ছে, যতক্ষণ না আর একতা স্ট্যাটাস এসে পড়ছে হোম পেজে। মানুষ বুঝতে যায় না বেশি। তুমি ভাবো না একটা মানুষকে বুঝতে কতটুকু টাইম নেয় একজন। মাঝে মাঝে আমি একটা খেলা খেলি, হুট করে একটা মানুষকে, আমার 'বন্ধু মানুষ', তাদের এমন দু টো কথা বলি, যা তাদের আঁতে লাগে। এই একটু আগেও আমরা গলায় গলায় ভাব ছিল। অমনি সে ক্ষেপে গেল, আমাকেও যা নয় তাই বলল। মনে মনে হাসলাম। আমাদের গোদা গোদা ভাবে সব কিছু দেখতে ভালো লাগে। 
অর্জুন: 
আমার সাইকিয়াট্রিস্টকে বললাম, এই যে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ছি, এতো শুধু আমার ব্যক্তিজীবনের কারণে নয়। দিল্লিতে যে একটা শুয়োরের বাচ্চা সরকার ব'সে আছে, সেও আমাকে  ক্ষেপিয়ে দেওয়ার জন্য, বিষণ্ণ ক'রে দেওয়ার জন্য, কোনো না কোনো ভাবে দায়ী। একটা পর্যায়ের পর তো সত্যিই কিছুই আর ব্যক্তিগত ব' লে প''ড়ে থাকে না তাই না

মৃগাঙ্কশেখর: 
থাকে না সেনসিটিভ মানুষদের কাছে থাকে না। অনেকের কাছে থাকে। তাদের কাছে কিছুতেই কিছু এসে যায় না। কিন্তু তুমি তো চেষ্টা করে সেটা পারবে না। যেমন তুমি চেষ্টা করেও দিল্লির সরকার পাল্টাতে পারবে না। 
মাঝে মাঝে আমার ইচ্ছে করে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। কোন প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে থাকি। কিন্তু তা হয় না। খাবো কি? তুমি তোমার মাথাটা বাঁচাবে না পেট বাঁচাবে? পরস্পর বিরোধী।

অর্জুন: 
আমি তো চেষ্টা করেও লিখতে পারছি না। ধুর বাল আমি চললাম ব'লে সমস্ত কাজকম্ম থেকে এখুনি সরে গিয়ে হাঁটা দিতে করছে। পারছি? পারছি না তো  
পরশু এক মজার ঘটনা হয়েছে। তোমায় দুটো মেইল পাঠাই। পড়ো। 


Jun 27 

প্রিয়,



এই মেলটি মুষ্টিমেয় কয়েকজনকেই পাঠাচ্ছি। বিরক্ত হওয়ার জন্য আপনিও সেই নির্বাচিতদের একজন। ঠাট্টা থাক। আজ সত্যিই খুব আনন্দ আমার। সদ্য প্রকাশিত হল আমার নতুন কাব্যগ্রন্থ  'প্রকল্প ও স্ফটিক'সভয়েই জানাই, পুনরাধুনিক পর্বের যাবতীয় লেখালেখি এই বইটিতে আমি রাখতে পেরেছি। প্রকাশ করেছেন 'কবিতীর্থ'প্রচ্ছদ প্রদোষ পালের করা। মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ১০০ টাকা। আপাতত পাওয়া যাচ্ছে ধ্যানবিন্দু এবং দে'জ-এ। বইটি বন্ধুদের বিনামূল্যে বিতরণের কোনো সুযোগ প্রকাশক আমাকে দিচ্ছেন না।  সংগ্রহ করলে, অথবা হাতে নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখলে আসল আনন্দটা আমার হবে, আরো বাড়বে। এটুকুই জানানোর ছিল।


বর্ষাকালীন শুভেচ্ছা জানবেন।
অনুপম মুখোপাধ্যায়

Jun 27  



একটু আগে ধড়ফড় করে ঘুম থেকে উঠলাম। দুঃস্বপ্ন দেখে। নিজের মৃত্যু-দৃশ্য। মৃত্যুর ঠিক আগে তোমার ফোন এসেছিল। আমি কোনো একটা গ্রামে আছি। মাটির রাস্তা। বৃষ্টিতে ভেজা। বাড়ির আশেপাশে অনেক কচুবন। বৃষ্টিতে সেসব ভিজে আরো ঘন সবুজ। তোমার সাথে ফোনে কথা হচ্ছে। আমি বাইরে, ওই জলে ভেজা কাঁচা রাস্তায়,হাঁটতে হাঁটতে তোমার সাথে কথা বলছি। তোমার বই নিয়ে কথা হচ্ছে। কাজ নিয়ে কথা হচ্ছে। তোমার বইটা আমি এখানে কি করে পেতে পারি, সেটা বলছি। এদিকে যারা আরো অনেকে থাকেন, তাঁরা কি করে পেতে পারেন, তা নিয়েও কথা হচ্ছে। আমি তোমায় বললাম, উৎপলদাকে বলো এখানে প্রণতি বুক্‌সে বই পাঠাতে। অথবা আমার এখানেও পাঠাতে পারে। এদিকের যারা যারা কিনতে চাইবে তারা প্রণতি বা আমার এখান থেকে কিনে নেবে।  কথার ফাঁকে ফাঁকে তুমি তোমার ব্যক্তিগত কিছু সমস্যাও শেয়ার করছিলে। সম্পর্ক-জনিত সমস্যা হয়েছে তোমার কিছু, সেটা বলছিলে।  হঠাৎ ফোনটা কেটে গেল। চার্জ ফুরিয়ে গেছে আমার ফোনে, কিম্বা লাইন এমনিই কেটে গেল। আমি ঘরে এসে গেছি। ঘরটা আলো-আঁধার। বৃষ্টিটা বেড়েছে। দেখলাম, আমার ফোনটা হ্যাঙ ক'রে গেছে। ডান দিকের লাল বোতামটা টিপে টিপে ওটাকে ঠিক করার চেষ্টা করছি। সুইচ বোর্ডের কাছে গিয়ে চার্জে বসাবো এবার। কি করে কোন্‌ একটা তারে, নাকি প্লাগ পয়েন্টে হাত লেগে গেল। আর আমি কাঁপছি। কিছুতেই হাত ছাড়াতে পারছি না। ঘুমটা ভেঙে গেল।  উঠে, কম্পিউটার অন ক'রে তোমার মেইল দেখলাম এখন।



অর্জুন  


মৃগাঙ্কশেখর: 
পাঠাও। আমি এখন প্রিয় বন্ধু শুনছি। বেশ লাগছে। আমার একটা জীবন কাটাতে ইচ্ছে করে। নিজে পারি না। অন্য কেউ কাটাচ্ছে দেখতে ভালো লাগে। কালকে পিপে মানে সৌম্য কে বলছিলাম, চল মাঝে মাঝে জানি না চিনি না এরকম জায়গায় যাই। বা যেখানে মানুষ খুব খারাপ আছে এরকম কোথাও। ছন্দককে লিখলাম, দেখা কর। বুঝতে পারছি, ইঞ্জিনিয়ার জীবন আমার নয়। পরীক্ষা এলে এখনো মনে হয় মরে যাই। কিন্তু পালাতে পারছি কই। আমি কালি পুজোর দিন সিদ্ধি খেয়েছিলাম। অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম। নার্ভ নিতে পারে নি। সেদিন মনে হয়েছিল, মরে যাচ্ছি। কিন্তু ইচ্ছে করছিল না। বাবা মা আর কিছুই করে যেতে পারলাম না, এই দুঃখটা আমাকে মরতে দিতে চাইছিল না।
আসছি খেয়ে
অর্জুন: ওকে

মৃগাঙ্কশেখর: আছো ?
তোমার মেইলটা পড়লাম। তোমার মরে যেতে ভয় লাগে অর্জুন দা?
                      Yester eve I saw philosophers in the market-

Place carrying their heads in crying aloud,

"Wisdom! Wisdom for sale!"

Poor philosophers! They sell their heads to feed their hearts.

অর্জুন: ঠিক জানি না। জানা নেই। যখন মরবো তখন দেখা যাবে

মৃগাঙ্কশেখর: লাইনটা গীর্বাণের
অর্জুন: আচ্ছা। 
এখন, ইদানীং, কিছু পড়ছ? নতুন কোনো বই, লেখা পড়লে? বা নতুন কিছু ভাবলে? করলে কিছু নতুন কাজ?

মৃগাঙ্কশেখর: না কিছুই হয় নি। কাল পরীক্ষা শেষ হল। আজ একটা গল্প পড়লাম শীর্ষেন্দু দার। একটা মানুষের শখ, সে লাশ কাটা ঘরে নগ্ন হয়ে শুয়ে থাকতে চায়।

অর্জুন: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তোমার দাদা!!!!?

মৃগাঙ্কশেখর: না উনি না। দত্ত।
উনি তো কাকু বা জেঠু কোন একটা হতে পারেন 😀
MRIGANKASEKHAR  12:20 AM
আচ্ছা, মৃগাঙ্ক, এবারে আমরা জল বেশি মদ কম খাচ্ছিলাম। এবারে র খাবো। কেমন?

মৃগাঙ্কশেখর: ফুয়েল মাজা দিয়ে খেয়েছ কখনো ?
অর্জুন: 
আচ্ছা বলো তো, এই যে তুমি বললে তাৎক্ষণিক কিছু কথাবার্তা বলতে চাও আমার সাথে। বাক্‌-এর আসছে সংখ্যার জন্য। মানে এটা তো একটা প্রোজেক্ট। যদি বাক।।-এর আগামী ইস্যুর জন্য এই কাজ না থাকতো, তবে তুমি এতক্ষণ এতো কিছু নিয়ে এভাবে কথা বলতে? বা মি বলতাম? বা আমরা বলতাম

মৃগাঙ্কশেখর: 
কি জানি জানি না। সত্যি বলতে আমার জীবনে কাজের বাইরের জীবনটা অনেক অনেক ছোট হয়ে গেছে। এই যে কাজের জন্য কথা বলতে এসেছি, বলতে গিয়ে ভালো লাগছে। যেভাবে ভেবেছিলাম, সে ভাবে কিন্তু কথাবার্তা হচ্ছে না। কিন্তু কথা বার্তাটা এনজয় করছি। 

অর্জুন: 
তুমি কিভাবে ভেবেছিলে?
মৃগাঙ্কশেখর: যেমন ভাবে ফর্মাল ইন্টার্ভিউ নি
অর্জুন: ইন্টারভুটা তখনই জমে, যখন দুজনেই ইরেক্টেড পেনিসের মতো খাপ খোলা তলোয়ার থাকে। 

মৃগাঙ্কশেখর: এটা ঠিক আর ইন্টার্ভিউ নেই। 
অর্জুন: এটা ইন্টার-আউটারভিউ
মৃগাঙ্কশেখর: finding neverland দেখেছ ?
অর্জুন: না দেখি নি মৃগাঙ্ক।
মৃগাঙ্কশেখর: সিনেমা দেখলে কিছু ইদানীং ?
অর্জুন: না দেখিনি... রাজর্ষিদা এসেছিল কদিন আগে... অনেকগুলো ফিল্ম দিয়ে গিয়েছে... একটাও দেখা হয় নি... মানে দেখার ধৈর্য নেই।
অনেকগুলো শর্ট ফিল্ম দেখলাম... ইন্ডিয়ারির ফেস্টিভালের জন্য
মানে, দেখা হ'ল।

মৃগাঙ্কশেখর: কোন দেশের ? এ দেশের ?
অর্জুন: হ্যাঁ, প্রথম ফেস্টিভালটা তো হচ্ছে সমসাময়িক বাঙালি পরিচালকদের কাজ নিয়ে
মৃগাঙ্কশেখর: কাদের কাদের সিনেমা আছে ?
অর্জুন: পরেরটা হবে ইন্টারন্যাশনাল পোয়ে-ফিল্ম ফেস্টিভাল। সেটার জন্য দারুণ কিছু (দারুণ মানে অসাধারণ) পোয়েফিল্মঅও দেখা হল

মৃগাঙ্কশেখর: পোয়ে-ফিল্ম ইণ্ডিয়াতে মনে হয় না কিছু হয়েছে।
অর্জুন: সেটা এখনই ডিসক্লোজ করা যাবে না মৃগাঙ্ক। মানে তোমাকে পার্সোনালি বলতে পারি। সেটা অফ দ্য রেকর্ড। যেহেতু এখনও অফিস্যাল ডিক্লেয়ারেশন  হয় নি। 
ব্রাজিলের একজনের একটা কাজ দেখলাম, পোয়ে-ফিল্ম, ছিটকে গেলাম। শালা হাতে জাদু 

মৃগাঙ্কশেখর: বাইরে অনেক কাজ হয় ছিটকে যাওয়ার মতো। এবং ইণ্ডিপেণ্ডেন্টলি। এখানেও সম্ভব যদি আমাদের মধ্যে সেই ইচ্ছে থাকে।
অর্জুন: ইচ্ছেটা কেন হবে?

মৃগাঙ্কশেখর: 
অসাধারণ করার কিছু ইচ্ছে। শুধু মাত্র নিজের নামটা ডিরেক্টর হিসেবে দেখতে না চেয়ে, বা ইগোটা বাদ দিয়ে মিলে মিশে একটা কাজ

অর্জুন: 
এত সহজে প্রচার পাওয়া যায় এখানে। শ্রম ছাড়া, অধ্যবসায় ছাড়া, গবেষণা ছাড়া, জোঁকের মতো একটা কাজে জীবন-পাত ক'রে লেগে থাকা ছাড়া, একটা কাজে নিজেকে এক্সেল না করেই তো প্রচার ফেম টাকা কাগজে ছবি পাওয়া যায়। তারপরে কেন হবে ইচ্ছে?

মৃগাঙ্কশেখর: ওগুলো আদপে কিছু নয়। এক জন শিল্পীর কাছে শিল্পটাই প্রথম ও শেষ কথা। 
অর্জুন: বালের কথা। 

মৃগাঙ্কশেখর: 
বাকি সব গুলো কেনা যায়, শিল্পটা কেনা যায় না।
আর সহজে যা পাওয়া যায় তা হারায় ও সহজে।
এখানে মানুষের আর একটা মুশকিল হল, শিক্ষার অভাব। 
পোয়ে-ফিল্ম এর কথাই ভাবো। একটাও কাজ নেই। যাকে প্রকৃত অর্থে পোয়ে-ফিল্ম বলা যায়।
ব্রাজিলের যার কথা বললে তার নাম কি? ছবিটার কি নাম ?

অর্জুন: 
ইণ্ডিয়ারির শর্ট ফিল্ম ফেস্টের জন্য ১৭টা ফিল্ম বাছা হয়েছে। প্রত্যেককে ধরে ধরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, ফিল্ম এবং সিনোপসিস দেওয়ার জন্য। আমার মেইল বা এফবি ইনবক্সে দিলেই হবে। কেউ কেউ আছেন তার মধ্যে যেন গোদার ত্রুফো !! বাপরে বাপ।এক মাস ধরে তার ফোন নাম্বার বিভিন্ন জনের কাছে চেয়ে যখন তাঁকে পেলাম, তিনি সিনোপসিস আজ পাঠান তো কাল পাঠান। এই করে দু-তিন সপ্তা।
শেষ মেশ আজ পাঠিয়েছেন
একজন  তো জিগ্যেস করলেন,  what are the award categories?আমি যখন বললাম, এটা প্রতিযোগিতা নয়। ফেস্টিভাল। তাই পুরষ্কারের ব্যবস্থা নেই। তাঁর উত্তর, '' so this is just a showcase of the films from 15th to 21st July?''
এই তো ছিরি

মৃগাঙ্কশেখর: এদের কাজ গুলো দেখেছ ?
আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, তাদের মান সম্পর্কে আমার সন্দেহ আছে। কারো কাজ না দেখেই বলতে পারি। আমি ইণ্ডিয়ার শর্ট ফিল্ম-এর গুণগত মান নিয়ে খুব একটা আশায় নেই। এখানে হয় টোকে না হলে ঐ গতে বাঁধা এক জিনিস দিনের পর দিন চালায়।

অর্জুন: 
দু ছর ধরে অনুবাদ - এর  কাজ করছি। নিজের লেখালিখির স্যাক্রিফাইস করেই করছি। আমার নিজের জন্যেই করছি। এটাই আমার রিসার্চ। কেউ কোনো কবি কক্ষনো আপত্তি করেনি। সবসময় যে অনুবাদের আগে তাঁদের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলে নেওয়া যায়, তাও নয়। কিন্তু আমি যাদেরকে নিয়ে এখন অব্দি কাজ করেছি, তাঁদের মধ্যে এমন একজনও নেই, তাঁদের সাথে পরে হলেও যোগাযোগ করিনি। যেভাবে হোক, যেখানে  থেকে মেইল আইডি কি কোনো সূত্র পেলে তাঁদের সাথে যোগাযোগ করেছি। প্রত্যেকে খুশিই হয়েছে। একমাত্র দেখেছি, ভারতীয়দের ক্ষেত্রে, দু বছর ধরে নক করেও, নো রিপ্লাই। একটা মেইলের সৌজন্য প্রাপ্তিটুকুও জানানোর প্রয়োজন মনে করে না এঁরা।
ইণ্ডিয়ায়ারির ইণ্ডিয়ায়ন ইংলিশ বিভাগের জন্য মিজোরামের একজন কবির কিছু কবিতা সিলেক্ট করে ইন্ডিয়ারিতে দিলাম। এবং সেই কবিকেও জানালাম, যে, তাঁর এই এই কবিতাগুলো আমাদের এই পত্রিকার জন্য নিচ্ছি। ইণ্ডিয়ারি কি ও কেন এবং কিভাবে কি ও কি কি কাজ করবে বা করতে চাইছে তাও তাঁকে জানালামউইথ লিঙ্ক।
তাঁর উত্তর, এ কবিতা অনলাইনে প্রকাশের জন্য নয়। ভাবো।

সবাই-ই যে এরকমই, তা নিশ্চয়ই নয়। তাহলে তো কাজই করা যেত না। কিন্তু ভারতীয় যাদের নিয়ে কাজ করতে গেছি, বা কাজের জন্য কোনোভাবে যোগাযোগ বা কথা বলতে গেছি, অসামান্য ভাবে অপমানিতই বোধ করেছি। গুপ্তচর ভাবো, আবদোলরেজাইয়ের যখন ইণ্টারভিউ নেবো বলে ঠিক করলাম,ম সে লোকটা রাজি হয়ে গেল। ইরানের কবি। নিজে ইংরেজিটাই ভালো করে বলতে / লিখতে পারে না। এখন তোমার সাথে যেভাবে কথা বলছি এই ভাবে গুগুল চ্যাটে কথা বলতাম ওর সাথে। 
আমার পরশগুলো ওকে ফারসিতে বুঝিয়ে দিত অনুবাদক আবোল ফ্রাওশান। সেগুলো শুনে ও ফারসিতে লিখত। আর সেটা আবার ইংরেজিতে অনুবাদ করে দিত আবৈল ফ্রাওশান। তারপর আমি পেতাম। ভাবতে পারো, কি সিরিয়াসনেস লোকগুলোর, কাজের জায়গায়!!?
মৃগাঙ্কশেখর: https://www.youtube.com/watch?v=M6ajDGrhr8M এটা দেখায় নি তোমায়। দেখো।
অর্জুন: হ্যাঁ, এই ফিল্মটা আমি দেখেছি, ইউটিউবে।
মৃগাঙ্কশেখর: আমি তোমাকে কখনো লিংক দিয়েছিলাম?
অর্জুন: শুধু আবদোলরেজায়েই না, আফঘানিস্তানের কামরান মীর হাজার, ইয়ারানের মরিয়ম্ম হুলিহ্‌, ইস্রায়েলের গিলি হাইমোভিচ, অরিট গিদালি, মার্সেলা সুলক, প্রত্যেকের মধ্যে এই সিরিয়াসনেস দেখেছি। বরং আমিই কখনো রিপ্লাই করতে দেরি করলে এঁরা দেখেছি ক্ষেপে যায়
না, তুমি দাওনি, আমিই দেখেছিলাম, খুঁজে

মৃগাঙ্কশেখর: হ্যাঁ এটা ঠিক। এবং এদের ব্যবহারটাও একদম আলাদা। কিছু করার নেই। এখানে সহজলভ্য হয়ে গেলে তাকে আমরা একটা দূর ছাই গোছে ফেলে দি। দোষটা আমাদেরও।
অর্জুন: ব্রাজিলের যাঁর কথা বলছিলাম, Christian Caselli
দেখো এঁর কাজ
পুরো ছিটিয়াল একটা লোক।

মৃগাঙ্কশেখর:  ধুর এ তো খুব সমস্যা করে। একটা পুরো চ্যাট উড়ে গেল।
অর্জুন: কি হ'?

মৃগাঙ্কশেখর:  যাই হোক। ঐ লিংকটা তোমায় দিলাম। আমার ছোটবেলার কিছু স্মৃতি তোমার সাথে শেয়ার করব বলে।
কাজটা দেখেই বুঝতে পারছ, কিছুই জানে না এমন একজনের কাজ। একদম আনাড়ি।
অর্জুন: জানো তো, এখানে, মানে কোচবিহারে, লোকাল ভাষায়, মানে রাজবংশীভাষায় না কিন্তু, মানে ঐ নিজেদের কলোকুয়াল ল্যাঙ্গুয়েজে, চ্যাট হ'ল বাঁড়া।
এবারে ভাবো, '' ধুর এ তো খুব সমস্যা করে। একটা পুরো চ্যাট উড়ে গেল।''
মৃগাঙ্কশেখর:  হা হা হা 😀
 সত্যিই তাই।
হ্যাঁ পুরোটা উড়ে যাওয়ার পর আমার সেরকমই মনে হচ্ছিল। কিন্তু উড়ন্ত বাঁড়া হলে ভাবো
অর্জুন: (হাসি)

মৃগাঙ্কশেখর:  তো যা বলছিলাম। তুমি যেরকম ছবি আঁকছ। আমিও দাদা র একটা ছোট ক্যামেরা, এস এল আর তো নয়ই। ওটাতে সেমি এস এল আর ও নয়। একদম পাতি যে ক্যামেরা গুলো হয়। সেরকম একটা দিয়েই নিজের আনন্দে এসব করতাম।
কোন দিন খ্যাতি নাম কাগজ এগুলো ভাবি নি
অর্জুন: হুম্‌। তারপর...?

মৃগাঙ্কশেখর: আর কাগজের কথা যদি বল কিছু সাংবাদিক(সাংবাদিকদের কোন ভাবেই অসম্মান করে বলছি না। গুটি কয়েকের কথাই বলেছি। সেটা দিয়ে সবাইকে বিচার করা যায় না।) বোঝেই না ফেস্টিভেলের ভ্যালু। কানে পয়সা দিয়ে ফিল্ম দেখানোর একটা ক্যাটাগরি আছে, সেটাতেই এখন সবাইকে পাঠাতে দেখি। আমি জানতাম না। তন্ময় একবার পাঠায় যখন তখন ও জানে বিষয়টা এরকম। শুধু শুধু পয়সাগুলো নষ্ট। সেটা নিয়েই এখানে খবরের কাগজে মাতামাতি করে। কিছু সাংবাদিক আছে যেগুলোর পেটে এটুকু বিদ্যে নেই যে ওটা আদৌ কোন সিলেকসানই নয়। এখানে এরকম একজন আছে যে বছরের পর বছর এভাবেই ছবি পাঠায় আর নিজেকে কান খ্যাত বলে। আমি যখন জানতে পেরেছিলাম, তখন থেকে প্রতিবার বলেছি সত্যিটা কি, বলেছি, ওটা কোন অফিসিয়াল সিলেকসান নয়, ওর সাথে আসল কান ফেস্টিভেলের কোন সম্পর্ক নেই। অচলায়তনের কোন পোস্টারে কানের নামও তাই রাখি নি। কোন কাগজেও জানায় নি। কারণ লজ্জা লেগেছিল, না জেনে ভুল করার পরও, লজ্জা লেগেছিল। আমি ভাবি বাকিদের কি সেই লজ্জাটুকুও নেই।
অর্জুন: হ্যাঁ, এটা আমিও জানতাম না। কয়েক সপ্তাহ আগেই জানলাম

মৃগাঙ্কশেখর: এর থেকেই বোঝা যায় এরা কাজের জন্য নয় খ্যাতির জন্য শিল্প কে ইউস করছে।
তবে নিউস রিপোর্টিং গুলো লাগে। কনভিন্স করার জন্য একটা রেকর্ড দরকার লাগে। ব্যাস এটুকুই এর থেকে বেশি কিছু না। কাগজে নাম বেরলেই সে দারুণ কাজ করবে এরকম নয়। দারুণ কাজ করতে গেলে কাজটাই শেষ কথা।
তোমার কাজ করার ক্ষিদে কেমন ?
অর্জুন: আমার তো এখন কিছু করতেই ইচ্ছে করছে না। সব ছেড়ে বসে আছি। ইনফ্যাক্ট লিখতেও চাইছি না। সন্দীপন ওঁর ডায়রিতে লিখেছিল। একটি ছেলেকে ডেকে এনেছে বাড়িতে। সে ফেরার সময় তাকে রাস্তায় এগিয়ে দিতে গিয়ে বলছে, আজ লিখতাম তুমি না এলে। তাই তোমাকে ডেকে আনলাম।

মৃগাঙ্কশেখর: বিনয় মজুমদারের একটা কবিতা আছে না?
কি যেন
অর্জুন: কি?

মৃগাঙ্কশেখর: চুপচাপ বসে থাকা প্রয়োজন এরকম কিছু
অর্জুন: মনে আসছে না। (পড়ছে না বলিনি কিন্তু)

মৃগাঙ্কশেখর:  কাগজ কলম নিয়ে চুপচাপ বসে থাকা প্রয়োজন আজ
প্রতিটি ব্যর্থতা, ক্লান্তি কী অস্পষ্ট আত্মচিন্তা সঙ্গে নিয়ে আসে ।
সতত বিশ্বাস হয়, প্রায় সব আয়োজনই হয়ে গেছে, তবু
কেবল নির্ভুলভাবে সম্পর্কস্থাপন করা যায় না এখনো ।
খুঁজে পেলাম
অর্জুন: এটাই। চুপচাপ বসে থাকা। চুপচাপ কথা বলা। মুখ দিয়ে নয়।

মৃগাঙ্কশেখর: তুমি ঘুমিয়ে পড়লে আমি পাশের ঘরে চলে যাব
পাশের ঘরে গেলে আমার ওজন কমে যায়
বা মাধ্যাকর্ষণ কম
অনায়াসে লাফ দিতে পারি
মনেই থাকে না ডানা নেই, পা নেই হাত নেই
কেবল মাথার মধ্যে ওড়ার ইচ্ছে লেগে আছে
অর্জুন: আজকে এইটুকু থাক মৃগাঙ্ক? কাল যদি দুজনেই বেঁচে থাকি, কাল বলি আবার কথা?

মৃগাঙ্কশেখর: হ্যাঁ বেঁচে থাকব। তোমার প্রথম সিনেমা এখনো বানানো বাকি।
অর্জুন: প্রথম বিয়েটাই তো বাকি
মৃগাঙ্কশেখর: এরকম অনেক কিছু প্রথম বাকি।
অর্জুন: কাল হবে চলো। 





My Blogger Tricks

0 comments:

Post a Comment